হ্যাজার্ড – লুকাকুর ক্ষিপ্রতায় শেষ টিউনিশিয়ার লড়াই

এবারের বিশ্বকাপে বড় দলগুলি যেভাবে তুলনামূলক ছোট দলগুলির কাছে নাকানিচোবানি খাচ্ছে, সেখানে বেলজিয়াম নিঃসন্দেহে দেখিয়ে দিচ্ছে কেন তাদের ফেভারিটের তকমা দেওয়া উচিত।

বেলজিয়াম – ৫ ( হ্যাজার্ড – ২ – পেনাল্টি ১, লুকাকু – ২, বাতসুয়ায়ি)

টিউনিশিয়া – ২ (ব্রন, খাজরি)

এবারের বিশ্বকাপে বড় দলগুলি যেভাবে তুলনামূলক ছোট দলগুলির কাছে নাকানিচোবানি খাচ্ছে, সেখানে বেলজিয়াম নিঃসন্দেহে দেখিয়ে দিচ্ছে কেন তাদের ফেভারিটের তকমা দেওয়া উচিত। প্রথম ম্যাচে পানামাকে উড়িয়ে দেওয়ার পর আজ টিউনিশিয়াকে একরকম মাটি ধরিয়ে দিল বেলজিয়াম। টিউনিশিয়া দারুণ লড়াই দেখালেও তারকাসমৃদ্ধ বেলজিয়াম তাদের লড়াইয়ের আগুন নিভিয়ে দিল।

খেলার শুরু থেকেই দুই দলের গতি – স্কিল – পাসিং দেখে চোখ জুড়িয়ে দেয়। হ্যাজার্ড – মিউনিয়ের – ক্যারাসকো বারবার টিউনিশিয়ান রক্ষণকে চাপে ফেলে দিয়েছিলেন। ৫ মিনিটে ইডেন হ্যাজার্ডকে বক্সের লাইনের ধারে ফেলে দেয় টিউনিশিয়ার বেন ইউসেফ। রেফারি ভিএআর প্রযুক্তির মাধ্যমে বেলজিয়ামকে পেনাল্টি দেয়। স্পট থেকে গোল করতে কোনও ভুল করেননি হ্যাজার্ড। গোল হওয়ার পরেও গতি এতটুকুও কমেনি। টিউনিশিয়ার ফরোয়ার্ডরা দারুণ ড্রিবল করে বেলজিয়ান বক্সে ঢুকে যাচ্ছিল, কিন্তু গোলের সুযোগ হয়ে ওঠেনি। ১৬ মিনিটে দ্বিতীয় গোল পায় বেলজিয়াম। দ্রিয়েস মার্টেন্সের পাস থেকে রোমেলু লুকাকু গোল করেন। এরপর হঠাতই খেলার গতির বিরুদ্ধে গোল করে টিউনিশিয়া। খাজরির ফ্রিকিক থেকে হেড করে গোল করেন ডিলান ব্রন। ১৯ মিনিটে ক্যারাসকোর দুরন্ত ভলি বাঁচান গোলরক্ষক বেন মুস্তাফা। একের পর এক সুযোগ তৈরি করে বেলজিয়াম, কিন্তু টিউনিশিয়ান রক্ষণ তা ভালোমত রক্ষা করে। অপরদিকে একা ওয়াবি খাজরি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন টিউনিশিয়ার হয়ে। এরপর প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে আরও এক গোল করে ম্যাচ নিজেদের আয়ত্ত্বে করে ফেলে বেলজিয়াম। মিউনিয়েরের পাস থেকে আগুয়ান গোলরক্ষকের উপর দিয়ে চিপ করে নিজের দ্বিতীয় গোল আদায় করেন লুকাকু।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও দেখতে পাই দুইদলের আক্রমণ। শুরুর দিকে টিউনিশিয়ার স্ট্রাইকাররা চাপে ফেলে বেলজিয়ান রক্ষণকে। কিন্তু ৫১ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান হ্যাজার্ড। ডিফেন্স থেকে লম্বা বলকে তাড়া করে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে নিজের দ্বিতীয় গোল তুলে আনলেন ইডেন হ্যাজার্ড। বেলজিয়ামের চতুর্থ ও ম্যাচের পঞ্চম গোল আসার পর খেলার গতি অনেকটাই কমে যায়। ৬১ মিনিটে হ্যাজার্ডের পাস থেকে ক্যারাসকোর দুরপাল্লার শট অল্পের জন্য বেরিয়ে যায়। বেলজিয়াম তুলনামূলক রক্ষণাত্মক হলে টিউনিশিয়া আক্রমণ শানাতে থাকে। বাদ্রি ও সাসি বারংবার চাপ বাড়ায় বেলজিয়ান ডিফেন্ডারদের উপর, বল পজেশনেও তারা এগিয়ে থাকে, কিন্তু গোলমুখ আর খোলে না। তবে দুর্ভাগ্যের শিকার হয় পরিবর্ত হিসেবে নামা মিচি বাতসুয়ায়ি। ৭৫ মিনিটে তার প্রয়াসকে গোললাইন থেকে বাঁচান মেরিয়া। ৮০ মিনিটে বাতসুয়ায়ির শট পোস্টে লাগে। আর তার পরেই তার শট দারুণভাবে বাঁচান গোলরক্ষক বেন মুস্তাফা। কিন্তু অবশেষে গোল পায় বাতসুয়ায়ি। ৯০ মিনিটে ইউরি টিলেমেন্সের পাস থেকে গোল করেন মিচি বাতসুয়ায়ি। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে ফের আরেকটা গোল করে টিউনিশিয়া। ওয়াবি খাজরি দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন। ৫-২ ফলে জেতে বেলজিয়াম।